শিশুদেরকে অবশ্যই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো জরুরি। সারা দেশে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী ও ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় । তবে বিভিন্ন বয়সের শিশুদের জন্য আলাদা আলাদা ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল রয়েছে। কোন ধরণের শিশুকে কোন ধরণের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে তা আপনাকে সঠিক ভাবে জানতে হবে। অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে তার সন্তানকে যেন অবশ্যই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। তাই আজ এই আর্টিকেলটিতে আমরা ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। 

আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা ভিটামিন -এ,শিশুদের  ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল খাওয়ানোর নিয়ম, ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুলের  উপকারিতা ,ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুলের  পার্শপ্রতিক্রিয়া ,ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল বেশি খেলে কি হয় এবং বড়োদের ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানবো। 

ভিটামিন এ :

ভিটামিন -এ হল চর্বিতে দ্রবনীয় ভিটামিন এবং প্রাণীদের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন -এ  এর রাসায়নিক নাম হচ্ছে রেটিনাল। মানবদেহে ভিটামিন -এ জারিত হয়ে রেটিনোয়িক অ্যাসিড তৈরি করে। ভিটামিন -এ খাদ্যের একটি খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান।

ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর  নিয়ম :

আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা শিশুদের কিভাবে ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় এ সম্পর্কে আলোচনা করবো। সারা দেশে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী ও ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়ে থাকে। 

৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুকে একটি করে লাল ক্যাপসুল এবং ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে নীল ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় । শিশুদের ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানো খুবই জরুরি। তাই অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে তার সন্তানকে যেন অবশ্যই ভিটামিন -এ ক্যাপসুল সঠিক নিয়মে খাওয়ানো হয়। 

শিশুদেরকে অবশ্যই ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানো অত্যান্ত জরুরি। শিশুকে অবশ্যই ভরা পেটে এই এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। এজন্য অভিভাবককে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন শিশুভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাই।  মুখ কেটে ভেতরে থাকা তরল ওষুধ চিপে খাওয়ানো হয়। তাই জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় ক্যাপসুল খাওয়ানো ঠিক নয়। এতে ক্যাপসুলের তরল লালার সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে।

ভিটামিন -এ ক্যাপসুলের মুখ  কাঁচি দিয়ে কেটে এর ভেতরে থাকা সবটুকু তরল ওষুধ চিপে শিশুকে খাওয়াতে হবে।জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় শিশুকে  ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। কারণ জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় ক্যাপসুল   খাওয়ালে ক্যাপসুলের তরল লালার সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে।

৬মাসের কম বয়সের শিশু ও ৫ বছর বয়সের বেশি শিশুদের এবং অসুস্থ শিশুদের এই ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানো  যাবে না। ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ার সময় স্বাস্থকর্মী এবং অভিভাবকদের অবশ্যই স্বাস্থবিধি মেনে চলা উচিত। 

শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর উপকারিতা-

৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী ও ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানো খুবই জরুরি।কারণ ভিটামিন-এ ক্যাপসুল আর বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে  । তাই অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে তার সন্তানকে যেন অবশ্যই ভিটামিন -এ ক্যাপসুল সঠিক নিয়মে খাওয়ানো হয়। আসুন এখন জেনে নেয়া যাক এর উপকারিতা সম্পর্কে। 

  • ভিটামিন -এ ক্যাপসুল শিশুর রাতকানা ও অন্ধত্ব রোগ প্রতিরোধ করে।
  • এই ক্যাপসুলশিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • অন্ধত্বের চারটি প্রধান কারণের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবজনিত কর্নিয়ার রোগ ও কর্নিয়ার ক্ষত অন্যতম। এই ভিটামিনটির অভাবে আপনার শিশু রাতকানা হয়ে চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  • এই ভিটামিন-এ ক্যাপসুল দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ত্বক ও শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির স্বাস্থ্যরক্ষার কাজ করে। দেহ বৃদ্ধি, বিশেষ করে দেহের অস্থি কাঠামোর বৃদ্ধি প্রক্রিয়ার সঙ্গে ভিটামিন -এএর সংযোগ রয়েছে।
  •  ভিটামিন -এ জীবাণু সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।

ভিটামিন -এ ক্যাপসুলের  পার্শপ্রতিক্রিয়া :

ভিটামিন -এ ক্যাপসুলের  কোনো পার্শ প্রতিক্রিয়া নেয়। যদি শিশুদের ভিটামিন -এ ক্যাপসুলের নিয়ম মেনে খাওয়ানো হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পার্শ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন ভিটামিন -এএর  মাত্রা যদি ২৫০০০ আইইউ কিংবা তার উপরে হয় তাহলে তার বিষক্রিয়া হতে পারে। ভিটামিন -এ ক্যাপসুল যদি মানসম্মত না হয় তাহলেও পার্শ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। 

ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল বেশি খেলে যা হয় :

ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর সঠিক নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম মেনে ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়া উচিত। কারণ এর পার্শ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বেশি মাত্রায় ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল খেলে বমি হতে পারে ,মাথা ব্যাথা ,মাথা ঘোরা ,মাথায় প্রেসার বেড়ে যাওয়া ,চোখে ঘাপসা দেখা ,মাংসে ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।তাই ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল বেশি না খেয়ে ভিটামিন -এ সম্মৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খাওয়া উচিত। 

বড়োদের ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম:

শিশুদের ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর সঠিক নিয়ম রয়েছে কিন্তু বড়োদের ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল খাওয়ার তেমন কোনো সঠিক নিয়ম নেয়। তবে বড়োদের ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল খাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে প্রতিদিন একবার অথবা দুই বার খেতে পারেন। অথবা  ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে  ভিটামিন -এ এর ক্যাপসুল খেতে পারেন। 

আরো পড়ুন :ডুমুর ফল খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম ও উপকারিতা। 

পরিশেষে :

বলা যাই যে ,প্রতিটি অভিভাবক তাদের শিশুকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে থাকেন। তার পর ও কিছু খাম খেয়ালির জন্য শিশুদের সমস্যা হতে পারে। তাই ভিটামিন -এ ক্যাপসুল খাওয়ার সময় স্বাস্থকর্মী এবং অভিভাবকদের অবশ্যই স্বাস্থবিধি মেনে চলতে হবে।  

 

Write A Comment