আসসালামু আলাইকুম আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন।দাঁত আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। দাঁত ব্যথা আমাদের বলে কয়ে আসে না। হঠাৎ যদি দাঁতে ব্যথা শুরু হয়ে যায়, দিশেহারা হয়ে আমরা ওষুধের খোঁজ করি। কিন্তু কিছু উপায় জানা থাকলে আমরা দাঁত ব্যথার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারি ।
দাঁত ব্যথা এমনই ব্যথা, যা আমাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। দাঁত ব্যথা হলে ঘুমানো যায় না, খাওয়া যায় না, কথা বলা যায় না।
দাঁত ব্যথার কারণ :
যেকোনো ব্যক্তির যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে এ সমস্যা। বিভিন্ন কারণে আমাদের দাঁত ব্যাথা হয়ে থাকে।যেমন –
- দাঁতের যথাযথ যত্ন ও সুরক্ষার অভাবে অনেক সময় দাঁতের ব্যাথা হয়।
- ক্যাভিটি হলে দাঁতের ব্যাথা হয়ে থাকে।
- দাঁতে ইনফেকশন হলে দাঁতের ব্যাথা হয়।
- ফিলিং পড়ে গেলে দাঁতের ব্যাথা হয়।
- দাঁত ফেটে গেলে দাঁতের ব্যাথা হয়ে থাকে।
- দাঁত দিয়ে রক্ত পরা থেকে ও অনেক সময় দাঁত ব্যাথা হয়।
- মাড়িতে ফোঁড়া হলে ও সাইনাস সংক্রমণ হলেও দাঁত ব্যথা করে ইত্যাদি।
দাঁতের ব্যথার উপায় :
দাঁতের ব্যথার কষ্ট ভুক্তভোগীরাই জানেন। দাঁতে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ তো নেবেনই। তবে ঘরোয়া কিছু প্রতিকার মেনে চললে আরাম পাওয়া যায় । ব্যথা অল্প সময়ের জন্য হলে ঘরোয়া উপায়ে মুক্তি পেতে পারেন। তবে দাঁতের ব্যথা দীর্ঘদিন ধরে চললে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে । তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়-
গরম পানি ও লবণ:
এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১ চামুচ লবণ মিশিয়ে মুখে নিয়ে ১ মিনিট রেখে ফেলে দিন। এভাবে ককিছুক্ষুণ করুন । এটি দিনে তিনবার কুলি করলেদাঁতে ব্যথা কমে যায়।
লবণ ও সরিষার তেল :
১ টেবিল চামুচ লবণ অল্প সরিষার তেলের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাড়িতে ম্যাসাজ করুন কয়েক মিনিট। তার পর কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করে নিন। এভাবে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে।
রসুন:
রসুন ঘরোয়া অ্যান্টিবায়োটিক। রসুন দাঁতে তৈরি হওয়া ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে ও ব্যথা উপশমেও সহায়ক। এক-দুটি রসুনের কোয়া নিয়ে থেঁতলে সামান্য লবণ মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় লাগান। রসুন চিবিয়েও খেতে পারেন। যন্ত্রণা কম না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন লাগাতে পারেন।
পিপারমিন্ট টি ব্যাগ:
তুলসি পাতা সংবেদনশীল মাড়ির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে থাকে । একটি ব্যবহৃত পিপারমিন্ট টি ব্যাগ নিন এবং এটি ঠান্ডা হতে দিন। এই টি ব্যাগটি আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করুন। টি ব্যাগটি কিছুটা গরম থাকা অবস্থায়ও ব্যবহার করতে পারেন।
লবঙ্গ:
লবঙ্গ হচ্ছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক।দুটো লবঙ্গ থেঁতো করে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতে লাগান।এছাড়া লবঙ্গ তেল কার্যকরীভাবে ব্যথা দূর করতে পারে এবং প্রদাহ হ্রাস করতে পারে। একটি তুলোর মাধ্যমে কয়েক ফোঁটা লবঙ্গ তেল লাগিয়ে আক্রান্ত জায়গায় প্রয়োগ করতে পারেন উপকার পাবেন।
গোলমরিচ ও লবণ :
লবণের সঙ্গে গোলমরিচ গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।ব্যাথা দাঁতে লাগিয়ে রাখুন কয়েক মিনিট। ব্যথা কমে গেলেও কয়েকদিন এটা করুন।
হিং ও লেবুর রস:
হিং- এক চিমটে হিং বা আধ চা চামচ হিং গুঁড়ো দুই টেবিল চামচ লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতে লাগান। এতে খুব তাড়া়তাড়ি দাঁত ব্যথা কমে যাবে।
পেঁয়াজ:
পেঁয়াজের অ্যান্টিসেপটিক গুণ যে কোনও ক্ষত, ব্যথা সারাতে সাহায্য করে থাকে । দাঁতে ব্যথা হলে এক টুকরো কাঁচা পেঁয়াজ চিবিয়ে খেয়ে নিন। যদি বেশি ঝাঁঝ লাগে তবে দাঁতের উপর পেঁয়াজ রাখলেও আরাম পাওয়া যায়।
পেয়ারা পাতা:
দাঁতে ব্যথা হলে একটা বা দুটো পেয়ারা পাতা চিবিয়ে নিন। দাঁতের গো়ড়ায় পাতার রস ঢুকে ব্যথায় আরাম পাওয়া যাবে।
অ্যালোভেরা জেল :
অ্যালোভেরায় থাকে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা দাঁতের জীবাণুকে নষ্ট করে দেয়। অ্যালোভেরা জেল নিয়ে ব্যথার জায়গায় লাগাতে পারেন।
হাইড্রোজেন পার অক্সাইড :
দাঁতের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে ও অস্বস্তি কমাতে ৩% হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড সল্যুশন দিয়ে কুলি করুন । দাঁতের ব্যথার কমে যাবে।
আরো পড়ুন :ঘাড়ে কালো দাগ হওয়ার কারণ ও দাগ দূর করার উপায়
পরিশেষে :
বলা যায় যে ,দাঁতে ব্যথা যে কী কষ্টকর তা ভূক্তভোগীরাই জানেন। এমন কোনও সময়ে, যেমন রাতবিরেতে, যদি দাঁতে ব্যথা শুরু হয়, যখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সুযোগ থাকে না,এমন পরিস্থিতিতে কয়েকটি ঘরোয়া উপায় কিন্তু স্বস্তি এনে দিতে পারে।আশা করি উপরোক্ত ঘরোয়া উপায় গুলো আপনাকে সাহায্য করবে।