আসসালামু আলাইকুম আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন। ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের সাথে স্ক্যানার যুক্ত করে স্ক্যান করার পদ্ধতিটা এখন পুরনো। স্মার্টফোনেই এখন অনেক রকম অ্যাপ রয়েছে যা দিয়ে আমরা স্ক্যানারের সুবিধা পেয়ে থাকি । সেই সুবিধাকে আরো সহজ করলো গুগল ড্রাইভ।

জরুরি কাগজপত্র স্ক্যান করার জন্য এখন থেকে আলাদা অ্যাপ ডাউনলোড করার প্রয়োজন হবে না । অ্যানড্রয়েড ফোনের মধ্যে থাকা ইনবিল্ট অ্যাপ্লিকেশন গুগল ড্রাইভ দিয়েই এই সুবিধা পাওয়া যাবে।

গুগল ড্রাইভ অনেকের জন্যই ব্যক্তিগত এবং অফিসের কাজে অপরিহার্য একটি টুল হিসেবে কাজ করে থাকে ।  অনলাইনে এটি ফাইল নিরাপদে সংরক্ষণ ও শেয়ার করার সুবিধা দেয়, যা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জমা রাখার জন্যও ব্যবহার করা হয়ে থাকে । এ প্রেক্ষিতে, গুগল ড্রাইভের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে স্ক্যান করা নথি বা ছবির মানোন্নয়নের জন্য গুগল নতুন একটি ফিচার যুক্ত করেছে । তবে নতুন এই সুবিধা চালু হলে বিল্ট-ইন স্ক্যানারের কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পাবে, ফলে স্ক্যান করা ডকুমেন্ট ও ছবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে উন্নত রেজল্যুশনে দেখা যাবে। এর পাশাপাশি স্ক্যান করা ফাইল দ্রুত সম্পাদনাও করা সম্ভব হবে।

বর্তমানে গুগল ড্রাইভ অ্যাপের মাধ্যমে স্ক্যানার দিয়ে নথি ডিজিটাল ফরম্যাটে সংরক্ষণ করা গেলেও মানোন্নয়ন ও সম্পাদনার জন্য ম্যানুয়ালি ফিল্টার অপশন ব্যবহার করতে হয়। তবে ‘অটো-এনহ্যান্স’ নামের নতুন ফিচারটি স্ক্যান করা ফাইলের মান স্বয়ংক্রিয়ভাবে উন্নত করবে এবং দ্রুত সম্পাদনার সুযোগ করে দেবে। জানুয়ারি ২০২৫ থেকে পর্যায়ক্রমে এই ফিচারটি গুগল ড্রাইভের সব ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে ।

গুগলের তথ্যানুসারে, এই ফিচারটি ব্যবহারের জন্য গুগল ড্রাইভ অ্যাপে ‘+ নিউ অপশন’-এ ক্লিক করে স্ক্যান অপশন (ক্যামেরা আইকন) নির্বাচন করা যাবে হবে। এরপর ফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে ডকুমেন্ট স্ক্যান করা যাবে। প্রথম বারে স্ক্যান করার সময় অ্যাপটিকে ক্যামেরা ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে। স্ক্যান করার পর প্রিভিউ মোডে একটি স্পার্কল আইকন দেখা যাবে। সেই আইকনে ক্লিক করলেই ‘অটো-এনহ্যান্স’ টুলটি সক্রিয় হয়ে যাবে , যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডকুমেন্ট বা ছবির মান উন্নত কয়ে তুলবে। এতে স্ক্যান করা নথি আরও পরিষ্কার, ঝকঝকে এবং সহজপাঠ্য হয়ে উঠবে।

গুগল ড্রাইভ দিয়ে স্ক্যান করার সুবিধা

শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রেও এটি দারুণ কার্যকরি সুবিধা হয়েছে । অনেকেই পিডিএফ ফাইল ওপেন করার জন্য গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করেন। যদি এর সাথে স্ক্যান করার সুবিধা পাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই। তবে গুগল ড্রাইভ দিয়ে এই স্ক্যান করার সুবিধা আইফোন, আইপ্যাড ও ডেস্কটপে কাজ করবে না।গুগল ড্রাইভ দিয়ে কিভাবে স্ক্যান করবেন-

(১)সবার প্রথমে আপনার স্মার্টফোনে গুগল ড্রাইভ ওপেন করুন।

(২) এবার হোম স্ক্রিনে নিচে (+)আইকনে ক্লিক করতে হবে ।

(৩) তারপর স্ক্যান অপশনে ক্লিক করতে হবে ।

(৪)এবার যেই ছবি বা কাগজপত্র স্ক্যান করতে চান সেটিকে ক্যাপচার করুন।

(৫) আপনি এখানে ওই ছবি বা কাগজপত্র ক্রপও করতে পারবেন, অ্যাডজাস্ট করতে পারবেন এবং রিফ্রেস করে আবার ক্লিক করতে পারবেন।

(৬) স্ক্যান করা হয়ে গেলে ডান অপশনে ক্লিক করতে পারবেন ।

এইভাবে আপনার ফোনে স্ক্যান করা কাগজপত্র সেভ হয়ে যাবে। এ ছাড়া যদি আপনি চান গুগল ড্রাইভ খুলতেই দ্রুত সব কাগজপত্র গুলো যাতে চোখে পড়ে এর জন্য শটকাট তৈরি করতে পারবেন।

সতর্কতা :

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে যে , ড্রাইভে একটি হুমকির সম্ভাবনা রয়েছে অর্থাৎ গুগল ড্রাইভে স্প্যাম আক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে । কিছু ব্যবহারকারী তাদের অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কিছু ফাইল খুঁজে পাচ্ছেন, যেগুলোকে ডাউনলোড করতে বলা হয়েছে। গুগল জানিয়েছে এই ফাইলগুলো আসলে ম্যালওয়্যার বা ফিশিং আক্রমণ জাতীয় কিছু হতে পারে, যা ব্যবহারকারীদের ডিভাইস এবং ডাটার ক্ষতি করতে পারে। 

প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়,  ড্রাইভ ব্যবহারকারীরা যদি কোনো সন্দেহজনক ফাইল খুঁজে পান, অবিলম্বে সেটিকে স্প্যাম বিভাগে রাখুন। সেই সঙ্গে অপরিচিত কোনো লিংক বা ফাইলে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে ভুল করে সন্দেহজনক ফাইল গ্রহণ করলেও আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। ফাইলটি নজরে পড়লে সেটিকে রিপোর্টও করা যাবে।

স্মার্টফোনে যেভাবে রিপোর্ট করবেন:

ফাইলটি যদি স্মার্টফোনে আসে স্ক্রিনের শীর্ষে তিনটি বিন্দু দেখা গেলে সেখানে ক্লিক করতে হবে এবং তারপর রিপোর্ট বিকল্পটি ক্লিক করুন। 

কম্পিউটারে যেভাবে রিপোর্ট করবেন:

যদি কম্পিউটারে ফাইলটি খুলে থাকেন তবে সেটির উপরে মাউসের রাইট বাটনে ক্লিক করুন। এর পরে স্ক্রিনে ‘ব্লক’ বা ‘রিপোর্ট’ বিকল্পটি দেখতে পাবেন সেটি নির্বাচনকরুন। 

পরিশেষে: 

বলা যাই যে ,ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করেন না, এমন মানুষ এখন খুঁজে পাওয়া সত্যিই দুষ্কর। এতে ডকুমেন্ট থেকে শুরু করে ছবি, ভিডিও ইত্যাদি স্টোর করতে পারেন ব্যবহারকারীরা। অনলাইনে এটি ফাইল নিরাপদে সংরক্ষণ ও শেয়ার করার সুবিধা দেয়, যা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জমা রাখার জন্যও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

Write A Comment