আসসালামু আলাইকুম আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন। রক্তে এলার্জি খুবই কষ্টদায়ক চুলকানি। এই চুলকানি এমন যেটা কিছুক্ষণের জন্য সীমাবদ্ধ হয় না। আপনি চুলকাতে চুলকাতে আপনার শরীরের ক্ষত করে দিলে ও এ চুলকানি যাবে না।
অনেক মানুষেরই রক্তে এলার্জি দেখা দেয়। নির্দিষ্ট সময় এলে সবারই প্রায় এই রক্তে এলার্জি দেখা দিতে পারে। এটা মানুষের জীবনের ব্যাঘাত ঘটানোর বড় একটি কারণ! সুতরাং রক্তে এলার্জি কমানোর উপায় শুধু জানলেই হবে না বরং সঠিক পদ্ধতিতে রক্তে অ্যালার্জি কমানোর উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে।
রক্তে এলার্জি হচ্ছে এমন এক অভ্যাস যেটা শরীর চুলকাতেই থাকে। শুধু এক মুহূর্তের জন্য নয় চুলকাতে চুলকাতে হয়রানি তবুও চুলকানি শেষ হয় না। এক কথায় রক্তে এলার্জি মানে চুলকানি।
রক্তে এলার্জি:
আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল কোন নির্দিষ্ট জায়গাতে হয় তা নয় বরং আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল সব জায়গায় হয়। সুতরাং রক্তে এলার্জি মানে নির্দিষ্ট কোন এক জায়গায় চুলকানি নয় সমস্ত জায়গা জুড়েই আপনার এই চুলকানি হতেই থাকবে।
যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি এই রক্তে এলার্জি দূর করার চেষ্টা করবেন, ততক্ষণ আপনারশান্তি আসবে না । এমনও দিন কাটবে যেখানে আপনি শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকতে পারবেন না। অর্থাৎ রক্তে এলার্জি খুবই ভয়ঙ্কর চুলকানি রোগ ।
রক্তে এলার্জির লক্ষণ:
আমাদের শরীরে অনেক কারণে অ্যালার্জি সৃষ্টি হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরণের অ্যালার্জি রয়েছে তবে রক্তে এলার্জি অবশ্যই মারাত্মক একটি ব্যাধি। রক্তে এলার্জি বেশি হলে কি হবে এবং যে সকল লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে তা অবশ্যই আমাদের সকলের জানা উচিত। কেননা আমাদের অনেকেরই এনার্জি হতে পারে।
রক্তে এলার্জি বেশি হলে কি হয় এবং যে সকল লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে তা জেনে নেওয়া যাক। রক্তে এলার্জির লক্ষণ গুলো নিম্ন রূপ –
- রক্তে এলার্জি হলে আমাদের নাক দিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে পানি বের হবে।
- চোখ লাল হবে।
- গলাতে চাপা চাপা ভাব অনুভূত হবে।
- শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানির সৃষ্টি হবে।
- তলপেটে ব্যথা অনুভূত হবে।
- বমি হওয়া অথবা বমি বমি ভাব অনুভূত হবে।
- শরীরে চাকা চাকা দাগ দেখা দিবে।
- আমাদের ঘ্রান শক্তি কমে যাবে।
- পেট কামড়ানো অর্থাৎ পেটে সমস্যা হবে।
রক্তে এলার্জি হলে মূলত এই সকল লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে। যদি এলার্জির কারণে আপনাদের এই সকল লক্ষণ গুলোর সৃষ্টি হয় বা লক্ষণ গুলো দেখতে পান তবে অবশ্যই আপনাকে ডক্টরের পরামর্শ নিতে হবে।
রক্তে এলার্জি বেশি হলে অসুবিধা:
এলার্জি রক্তে বেশি হলে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যে সকল সমস্যা গুলো আমাদের শরীরের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পরবর্তী সময়ে আমাদের এই সমস্যা কারণে মৃত্যু ও হতে পারে। রক্তে এলার্জি বেশি হলে আমাদের যে সকল সমস্যাগুলো হতে পারে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো। রক্তে এলার্জি বেশি এনাফ্লেক্সিস হতে পারে। এই রোগ টি হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে।যেমন-
- শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
- ত্বকে লালচে দাগ দেখা দেওয়া।
- জিহ্বা বা ঠোঁট ফোলা ফোলা ভাব হাওয়া।
- মুখ ফুলে যাওয়া।
- চুলকানির সৃষ্টি হওয়া।
- বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
- নিম্ন রক্তচাপ ইত্যাদি ।
এছাড়া আর ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আপনাদের এই সকল সমস্যাগুলো দেখা দেয় তবে আপনারা অবশ্যই খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে । তা না হলে পরবর্তী সময় আপনার জীবন সংকটময়ী হতে পারে।
রক্তে এলার্জি কমানোর ঘরোয়া উপায়:
আপনি নিজে বুঝতে পারবেন আপনার কোন জিনিসগুলো বা কোন গুলো ব্যবহার করলে আপনার অ্যালার্জি সৃষ্টি হয়ে থাকে । আপনার যে বিষয়ের প্রতি এলার্জি থাকুক না কেন সেগুলো থেকে আপনি অবশ্যই দূরে থাকবেন। আর অবশ্যই আপনারা ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবেন। তাহলে আপনারা এরূপ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারবেন ।
যদি আপনার রক্তে এলার্জি থেকে থাকে আর আপনি যদি ঘরোয়া উপায়ে রক্তে অ্যালার্জি কমাতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কোন বিষয়ে অবহেলা করা যাবে না। আপনি যদি এই সকল নিয়ম মেনে না চলেন অবহেলা করেন তবে আপনি এই রোগটি থেকে পরিত্রাণ পাবেন না। যদি আপনি এই রোগটি থেকে ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে বাঁচতে চান অথবা রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে এই সকল বিষয়গুলোর দিকে বেশ নজর দিতে হবে।
(১) ধূমপান পরিহার করা :
আমরা জানি ধূমপান আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আর এই ধূমপানের কারণে আমাদের এলার্জি আরো বৃদ্ধি পেয়ে থাকে । সুতরাং অবশ্যই ধূমপান পরিহার করতে হবে।
(২)অ্যালকোহল পরিত্যাগ করা :
অ্যালকোহল ও আমাদের এলার্জিকে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে থাকে। যদি আপনার অ্যালার্জি থাকে তবে আপনার অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা উচিত।
(৩)এলার্জি যুক্ত খাবার পরিহার করা :
আপনার যদি রক্তে এলার্জি থাকে তবে সেটি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে অ্যালার্জিযুক্ত খাবার গুলো পরিহার করতে হবে। এলার্জিযুক্ত খাবার খেলে আপনাদের অ্যালার্জি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়ে যায়। সুতরাং সেই সকল খাবারগুলো থেকে অবশ্যই আপনাকে বিরত থাকতে হবে। এলার্জি বৃদ্ধি পেলে অনিয়ন্ত্রণ হয়ে গেলে জীবন সংকটময়ী হয়ে যেতে পারে। সুতরাং আপনাদের যে সকল খাবারগুলোতে অ্যালার্জি রয়েছে অবশ্যই সেই সকল খাবার গুলো পরিহার করতে হবে।
(৪)সুগন্ধি পরিহার করা :
আমরা অনেকেই অনেক রকম সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকি। তবে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা সব রকম সুগন্ধি সহ্য করতে পারে না। তাই আপনাদের যে সকল সুগন্ধিতে সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ যে সকল সুগন্ধিতে এলার্জি সৃষ্টি হয় সেই সকল সুগন্ধি গুলো থেকে দূরে থাকতে হবে । এক কথায় যেহেতু আপনার অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে সুতরাং আপনারা যে সকল বিষয়গুলোতে আপনার অ্যালার্জি রয়েছে সবগুলো থেকে আপনাকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
রক্তে এলার্জি কমানোর ঔষধ:
রক্তে এলার্জি কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের ওষুধ রয়েছে। আপনার যদি রক্তে এলার্জি থেকে থাকে তাহলেআপনি এই সকল ঔষধ গুলো ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, এই সকল ওষুধগুলো আপনারা সেবন করলে আপনাদের রক্তে এলার্জি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে অবশ্যই ওষুধগুলো সেবন করার পূর্বে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিতে হবে ।
কারণ অনেক ওষুধে সাইড ইফেক্ট থাকে সব ওষুধ সবার শরীরে অ্যাডজাস্ট হয় না। সুতরাং ওষুধ সেবন করার পূর্বে ডক্টরের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
রক্তে এলার্জি কমানোর ঔষধের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
- Acitrin.
- Citin.
- Cetmax.
- Atrizin.
- Rizin.
- Alargol.
- Cetizin.
- Alatrol.
এগুলো ছাড়া আরোও অন্যান্য ওষুধ রয়েছে। এই সকল ওষুধগুলো আপনারা সেবন করলে এই এলার্জিগুলো তৎক্ষণিক সময়ের জন্য কমবে। তবে অবশ্যই আপনারা ডক্টরের পরামর্শ নিবেন এবং ডক্টর যেভাবে বলে সেভাবে নিয়ম মেনে ঔষুধ খাবেন । তাহলে আপনারা এই রোগ থেকে পরিত্রান পাবেন।
রক্তে এলার্জি থাকলে কোন কোন খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন :
রক্তে এলার্জি থাকলে আমাদের অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। আমরা যে কোন স্থানে যে কোন খাবার খেতে পারিব না। অনেক খাবারের প্রতি আমাদের আকর্ষণ থাকার সত্ত্বেও সে সকল খাবার গুলো শুধুমাত্র এলার্জির কারণে আমাদের বর্জন করতে হবে । অর্থাৎ এই সকল খাবার গুলো যদি আমরা অ্যালার্জি থাকা সত্ত্বেও খেয়ে থাকি তবে আমাদের শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যে সকল খাবার গুলো এলার্জির কারণে খেতে পারবেন না তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো –
- তিল
- দুধ
- ডিম
- চিনা বাদাম
- তিল
- মাছ
- বিভিন্ন ধরনের বাদাম, যেমন, কাঠবাদাম, পাইনবাদাম, ব্রাজিল নাটস, পিক্যান্স ইত্যাদি।
- বিভিন্ন ধরনের মাছ, যেমন, চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক ইত্যাদি।
এই সকল খাবারগুলোতে বেশি পরিমাণ এলার্জি থেকে থাকে। আপনার যদি এই সকল খাবারগুলোতে অ্যালার্জি থেকে থাকে তবে এই খাবারগুলো খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারবেন। মূলত যে সকল খাবারগুলোতে আপনাদের এলার্জি রয়েছে সে সকল খাবার গুলো থেকে আপনারা দূরে থাকতে হবে । তাহলে আপনাদের অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
আরও পড়ুন :খুব সহজে দাখিল পরীক্ষার রেজাল্ট দেখার নিয়ম।
পরিশেষে :
বলা যায় যে, আমরা অনেকেই সচেতনতার অভাবে যেকোন ঔষধ ক্রয় করে সেবন করে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করি । যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি ব্যাপার। উপরে দেওয়া ঔষধ গুলো কখনোই নিজে নিজে সেবন করা ঠিক হবে না । ওষুধ সেবনের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে রক্তে এলার্জি কমানোর উপায় বা রক্তে এলার্জি হলে কি হয় এই বিষয় সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন।তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করে কোন ধরনের সমস্যায় পড়লে আমাদের ওয়েবসাইট দায়ী নয়। আমাদের ওয়েবসাইট শুধুমাত্র আপনাদেরকে তথ্য সরবরাহ করে থাকে ।