আসালামু আলাইকুম আশা করছি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন। সাদা ঝকঝকে দাঁত সবাই চায়। শুধুমাত্র দেখতেই যে ভালো লাগে তাই নয় সুস্থ শরীরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সাদা দাঁত। কিন্তু অনেকসময় বয়সের কারণে বা অন্যান্য কারণ যেমন ধূমপান, জিনগত কারণে, অতিরিক্ত চা-কফি খাওয়ার কারণে দাঁতের ওপর হলদেটে দাগ পড়ে যায়।
সমীক্ষায় দেখা গেছে ১৮-৪৯ বয়সীদের মধ্যে দাঁত সাদা করার প্রবণতা বেশি। বিশেষ করে যাঁরা নিজের চেহারা নিয়ে সচেতন, সাজগোজ করতে ভালোবাসেন কিংবা নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পছন্দ করেন তাঁদের মধ্যে দাঁত সাদা করার প্রবণতা বেশি থাকে। এর জন্য তাঁরা দাঁতের ডাক্তারের কাছে ছোটেন আজকাল আবার টিথ স্টাইলিং ক্লিনিকও রয়েছে। কিন্তু এখানে সমস্যা হল খরচ হয়ে যায় প্রচুর। চাইলে ঘরোয়া পদ্ধতিতেও দাঁত সাদা করা যায় । এর জন্য খরচ প্রায় হয় না বলেলই চলে। তাছাড়া ক্লিনিকগুলিতেবেশিরভাগই দাঁত ব্লিচ করার রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। আর এই পদ্ধতি অনেকের ক্ষেত্রেই ক্ষতিকারক।
দাঁত হলুদ হওয়ার কারণ :
দাঁত সাধারণত বিভিন্ন কারণে হলদে রঙের হয়ে যায়। তাই হলদে হওয়ার আগেই দাঁতের যত্ন নিতে শুরু করুন।নিম্নে কিছু কারণ দেয়া হলো –
- নিয়মিত ধূমপান করলে দাঁত হলদেটে হবেই। সিগারেটের নিকোটিনের কারণে
- দাঁতের রং হলদে হয়ে যায়।
- রেড ওয়াইন দাঁতের রং হলদেটে করে এবং সাদা ভাব নষ্ট করে দেয়।
- পান, তামাক,জর্দা, মুখশুদ্ধি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এতে দাঁতের সাদা রং একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।
- কফি, সোডা জাতীয় পানীয় অতিরিক্ত খেলে দাঁতে দাগ ধরে দাঁতের রং নষ্ট হয়ে যাই ।
- চিনি কিংবা অতিরিক্ত মিষ্টি খেলেও দাঁতের রং বদলে যায় বা হলদেটে হয়ে যায়।
- রঙিন খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে দাঁথ মেজে নিন তা না হলে দাঁতে রং ধরবে ।
দাঁত সাদা করার উপায়:
সুন্দর ধবধবে-ঝকঝকে সাদা দাঁতের হাসির কোনও তুলনাই হয় না। একটা হাসি ভুবন ভুলিয়ে দিতে পারে। তাই এই হাসিকে রক্ষা করার দায়িত্ব আপনারই। তাই দাঁতের সাদাটে ভাব যেন চলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন এবং কিছু ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করুন। নিচে কিছু ঘরোয়া উপায় দেয়া হলো –
বেকিং সোডা:
দাঁতের স্টেইন নির্মূল করার ঘরোয়া প্রতিকার হলো বেকিং সোডা। এটি প্রাকৃতিকভাবে দাঁত সাদা করার একটি অন্যতম উপায়। তাই প্রতিদিন যে টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজেন, তাতে অল্প বেকিং সোডা ও সামান্য জল দিয়ে ৩০ সেকেন্ড দাঁত পরিস্কার করতে পারেন। এছাড়া টুথব্রাশটির যাতে ওরাল হাইজিনের জন্য উপযুক্ত হয়, তা খেয়াল রাখাও প্রয়োজন।
নারকেল তেল:
সাদা দাঁত পেতে নারকেল তেলের ব্যবহার অন্যতম ঘরোয়া টোটকা। অনেক মানুষ আছেন যাঁরা সাদা দাঁতের পাশাপাশি উজ্জ্বলতা বাড়াতে নারকেল তেল ব্যবহার করে থাকেন । টুথব্রাশে কয়েকফোঁটা নারকেল তেল নিয়ে ব্রাশ করতে পারেন। অন্যদিকে সুতির কাপড়ের মধ্যে কয়েক ফোঁটা নারকেল নিয়ে দাঁতের উপর ঘষে নিতে ও পারেন।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগার:
এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা দাঁত পরিস্কার করতে ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে অল্পপরিমাণ অ্যাসিডিক থাকে, তাই প্রতিদিন ব্যবহারের কারণে দাঁতের এনামেলে ক্ষতি হতে পারে।তবে মাউথওয়াশ হিসেবে বা টুথব্রাশের মধ্যে কয়েক ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিয়ে ব্রাশ করলে উপকার পাবেন। প্রিতিদন ২ মিনিট করে এই উপকারী ভিনিগার ব্যবহার করলে ফল দ্রুত পাবেন ।
লেবুর রস:
দাঁত ঝকঝকে সাদা করতে লেবু কোনো বিকল্প নেই।লেবু আপনার হাতের কাছেই পাওয়া যায়। সাদা এক চিমটি লবণ ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত সাদা হয়। এছাড়া লেবুর খোসা দিয়ে আপনার দাঁত স্ক্রাবিং করতে পারেন। এতে আপনার দাঁত সাদা ও ঝকঝকে অবশ্যই হবে।
কমলার খোসা বা লেবুর খোসা:
দাঁত সাদা করতে কমলার খোসা বা লেবুর খোসা জাদুর মতো কাজ করে।কমলার খোসা বা লেবুর খোসা রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নন। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে কমলার খোসা বা লেবুর খোসার গুঁড়ো দিয়ে দাঁত মাজুন । এতে দাঁত আরো সাদা এবং শক্তিশালী হয়।
স্ট্রবেরি:
এই ফল প্রাকৃতিকভাবেই দাঁত সাদা করে। স্ট্রবেরি খাওয়ার পাশাপাশি দাঁতে ঘষলেও এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে।
পেয়ারা পাতা ও নিম:
নিমের দাঁতনের প্রচলন শতকের পর শতক ধরে আছে । আর সেটা যে বিনা কারণে নয় তা বলাই বাহুল্য। দাঁতের কালো দাগ তুলতে নিমের দাঁতন দিয়ে দাঁত মাজুন। এতে দাঁতের কালো দাগ দূর করার পাশাপাশি ডট্ সাদা করবে।এছাড়াও কচি পেয়ারা পাতা দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের রং সাদা হয়।
আরো পড়ুন :ডেঙ্গু জ্বর এর লক্ষণ ,ধরণ ও প্রতিরোধের উপায়।
পরিশেষে :
বলা যাই যে ,দাঁত ভালো রাখার জন্য যে বিষয়টা বেশি দরকার তা হলো দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখা। নিয়মিত দুবার ব্রাশ করুন, ফ্লসিং করুন। এতে করে দাঁতের ক্ষয় থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সেই সাথে দাঁতে দাগও পড়বেনা এবং ভালো থাকবে।ঘরোয়া উপায়ে কাজ না হলে ডেন্টিস্টের সাথে পরামর্শ করতে হবে।