আসসালামু আ’লাইকুম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমরা আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র বিষয়ে কমবেশি সবাই জানি।আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্রবের করা সম্পর্কে আর্টিকেলটিতে জেনে নেয়া যাক।
ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র খুব প্রয়োজনীয় একটি সনদ। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য তা আরো গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সরকার দেশের সর্বোস্তরের জনগণেকে সর্বোচ্চ নাগরিক সেবা প্রদানে স্মার্ট কার্ড বিতরণ এবং বৈধতা নিশ্চিত করে আসছে।২০০৮ সাল থেকে ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা স্মার্ট কার্ড দেয়া শুরু হচ্ছে। শুরু থেকেই এই জাতীয় পরিচয়পত্রে বিভিন্ন ভুল থাকার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
অথচ ঘরে বসেই প্রমাণসহ অনলাইনে আবেদন করে ১৫ থেকে ২০দিনের মধ্যে এই ভুলগুলো সংশোধন করা যায়।
Id card এ যেসব ভুল সংশোধন করা যায়:
যেসব ভুলগুলো সংশোধন করা যায় তা হচ্ছে-
- বিয়ের পর স্বামীর নাম যুক্ত করা,
- বিবাহ বিচ্ছেদের পর স্বামীর নাম বাদ দেয়া,
- নতুন করে বিয়ে হলে পরবর্তী স্বামীর নাম যুক্ত করা,
- পেশা পরিবর্তন,
- পিতা-মাতা মারা গেলে মৃত উল্লেখ করার প্রক্রিয়া,
- ঠিকানা পরিবর্তন,
- জন্মতারিখ পরিবর্তন,
- স্বাক্ষর পরিবর্তন ,
- বানান ভুল হওয়া ইত্যাদি।
Id card এর ভুল সংশোধন:
জাতীয় পরিচয়পত্র ভুল সংশোধন করতে হলে নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে। এই আবেদন দুই ভাবে করা যায়।
- অন লাইনে ভোটার ID CARD সংশোধন।
- অফ লাইনে ভোটার ID CARD সংশোধন
অন লাইনে ভোটার ID CARD সংশোধন করার নিয়ম:
*ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য প্রথমে ভিজিট করুন services.nidw.gov.bd সাইটে।এটা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইড |
* এখানে NID নম্বর, জন্ম তারিখ ও ঠিকানা দিয়ে একাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন করুন।
*একাউন্টে Log in করে প্রোফাইলের ভুল তথ্যসমূহ এডিট করুন এবং সঠিক তথ্য বসান ।
* মোবাইল ব্যাংকিং অথবা এজেন্ট ব্যাংকিংএর মাধমে সংশোধন ফি জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় প্রমানপত্র Upload করে আবেদন সাবমিট করুন।
আবেদন অনুমোদন হলেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হবে।এতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে |
অফ লাইনে ভোটার ID CARD সংশোধন করার নিয়ম:
* জেলা, উপজেলা, থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম- ২ সংগ্রহ করতে হবে।
* ফরমটি সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করতে হবে।
* প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফরমের সঙ্গে পিন-আপ করে জমা দিতে হবে।
* মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বিকাশ অথবা রকেটের মাধ্যমে সংশোধন ফি পরিশোধ করতে হবে। এরপর সংশোধনের কার্যক্রম শুরু হবে।
Id card এর ফি প্রদান:
ভোটার i d কার্ডের তথ্য সঠিকভাবে দেওয়ার পরে আপনাকে নির্ধারিত পরিমাণ ফি প্রদান করতে হবে । এর পর মোবাইল ব্যাংকিং অথবা এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার i d কার্ড সংশোধনের অনলাইন ফি প্রদান করতে পারবেন । কোন কোন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ফি প্রদান করা যাবে।
- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড।
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।
- ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এবং রকেট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।
- ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড এবং ওকে ওয়ালেট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।
- ট্রাষ্ট ব্যাংক লিমিটেড এবং টি-ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।
- মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক লিমিটেড।
অনলাইনে I D কার্ড সংশোধন ফি:
উল্লেখ্য, ID কার্ডের যে তথ্য আছে, তার যে কোনো একটি সংশোধন করতে চাইলে-
- প্রথমবার আবেদনের জন্য ২০০ টাকা,
- দ্বিতীয়বার ৩০০ টাকা এবং
- পরবর্তী যতবার আবেদন করবেন ৪০০ টাকা ফি দিতে হবে।
ID কার্ডের ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজের কপি আপলোড করার প্রয়োজন হবে। যেমন-
জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম সংশোধনের জন্য:
নাম সংশোধনের জন্য জন্ম নিবন্ধন, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সনদপত্র ওপাসপোর্টের কপি প্রয়োজন হবে।
আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য:
* ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য বিদ্যুৎ বা পানির বিলের কাগজ।
ID কার্ডে স্বামীর নাম যোগ করার জন্য:
* বিয়ের পর স্বামীর নাম যোগ করতে চাইলে নিকাহনামা, স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
ID কার্ডে স্বামীর নাম বাদ দিতে :
* যদি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে আর তার কারণে স্বামীর নাম বাদ দিতে চাইলে তালাকনামা divorce pepper সংযুক্ত করতে হবে।
এ ছারা অনন্যা তথ্য পরিবর্তনের জন্য আরো কাগজের প্রয়োজন হবে সেগুলো হলো –
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি (বাধ্যতামূলক)।
- সন্তানদের ভোটার আইডি কার্ডের কপি অথবা শিক্ষা সনদ অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ (যদি থাকে)।
- স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কার্ডের কপি (যদি থাকে)।
- সার্ভিস বই/এমপিও শীটের কপি (চাকরিজীবি হলে)।
- পৌর মেয়র/চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)
আরো পড়ুন :আপেল সিডার ভিনেগার বানানো ও খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা
পরিশেষে :
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে একটি তথ্য শুধুমাত্র একবারই সংশোধন করা যাবে। তথ্য সংশোধনের সময় তাই খেয়াল রাখতে হবে পরিবর্তনটি যেন একদম ঠিকঠাক হয়।
উপরে উল্লেখিত উপায়ে সহজেই আপনি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন- এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।